আর্কিমিডিস এর জীবনী
Archimedes Biography in Bengali
আর্কিমিডিস এর জীবনী – Archimedes Biography in Bengali : আর্কিমিডিস ছিলেন পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানী, ক্লাসিক্যাল যুগটা তারই ছিল। আর্কিমিডিস (Archimedes) ছিলেন তার সময়ের আইনস্টাইন, অথবা আইনস্টাইন হচ্ছেন নিজের সময়ের আর্কিমিডিস। কেবল একটি শব্দ ‘বিজ্ঞানী’ দিয়ে তাকে বর্ণনা করা যায় না। আর্কিমিডিস (Archimedes) কি ছিলেন তা প্রশ্ন না করে বরং প্রশ্ন করা উচিৎ তিনি কি ছিলেন না। তিনি একাধারে বিজ্ঞানী, গণিতবিদ, পদার্থবিদ, প্রকৌশলী, উদ্ভাবক এবং রূপকার। আর্কিমিডিস (Archimedes) ভুলক্রমেই হয়তবা এতো প্রাচীন সময়ে জন্মেছিলেন। কেননা তার সময়ের চেয়ে আর্কিমিডিস (Archimedes) হাজার বছর এগিয়ে ছিলেন। মাঝে মাঝে আফসোস হয় যখন ভাবি, কেন যে আর্কিমিডিস আধুনিক যুগে জন্ম নিলেন না!
আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক আর্কিমিডিসের একটি সংক্ষিপ্ত জীবনী । আর্কিমিডিস জীবনী – Archimedes Biography in Bengali বা আর্কিমিডিসের আত্মজীবনী বা আর্কিমিডিস (Archimedes Jivani) জীবন রচনা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
আর্কিমিডিস কে ছিলেন ? Who is Archimedes ?
আর্কিমিডিস (Archimedes) ছিলেন একজন গ্রিক গণিতবিদ, পদার্থবিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, জ্যোতির্বিদ ও দার্শনিক। যদিও তার জীবন সম্পর্কে খুব কমই জানা গেছে, তবুও তাকে ক্ল্যাসিক্যাল যুগের অন্যতম সেরা বিজ্ঞানী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। … রোমান দার্শনিক সিসেরো আর্কিমিডিসের সমাধীর উপরে একটি সিলিন্ডারের ভেতরে আবদ্ধ একটি গোলকের উল্লেখ করেছেন।
আপেক্ষিক তত্ত্বের জনক আর্কিমিডিস এর জীবনী – Archimedes Biography in Bengali :
নাম (Name) আর্কিমিডিস (Archimedes)
জন্ম (Birthday) ২৮৭ বিসি (287 BC)
জন্মস্থান (Birthplace) সিরাকিউজ শহর, ইতালি (Syracuse City in Italy)
যুগ সুপ্রাচীন দর্শন
অঞ্চল শ্রেষ্ঠ গ্রিক দার্শনিক
ধারা আলেকজান্দ্রিয়ার উইক্লিড
সাধারণ দর্শণ
আগ্রহ গণিত, পদার্থবিদ্যা, প্রকৌশল, জ্যোতির্বিজ্ঞান, আবিষ্কার
অবদান Fluid statics, লিভার,
infinitesimals
মৃত্যু (Death) ২১২ বিসি (212 BC)
আর্কিমিডিস এর জন্ম ও পরিচয় – Archimedes Birthday :
ইতালীর অন্তর্গত সিসিলি দ্বীপের সিকিউরিজ শহরে খ্রীষ্টপূর্ব ২৮৭ সনে আর্কিমিডিসের জন্ম । তৎকালে সিকিউরিজ শহরে ছিলাে । গ্রীকদের বসতি । এই সিকিউরিজ শহরে বাস করতেন ফিডিয়াস নামের এক জ্যোতির্বিদ । শহরের্তার জ্যোতির্বিদ হিসাবে খুব নামডাক ।। তারই পুত্র আর্কিমিডিস । তখন কে জানতাে যে এই আর্কিমিডিসই একদিন বিশ্বের বিজ্ঞানজগতে এক উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতাে ভাস্বর হয়ে থাকবেন তার অকল্পনীয় মেধা আর বলবিদ্যা বিষয়ে অপূর্ব পারদর্শিতার জন্যে।
আর্কিমিডিস এর শিক্ষাজীবন – Archimedes Education Life :
ছােটবেলা থেকেই আর্কিমিডিস ছিলেন বিজ্ঞানমনস্ক । বাড়িতে বাবার কাছেই লেখাপড়া শিখে অঙ্ক ও জ্যামিতিতে ক্রমশ পারঙ্গম । হয়ে উঠলেন । প্রতিটি জিনিসই প্রমাণ সাপেক্ষে বিশ্বাস করতে শেখেন । সেকালে বিজ্ঞান ছিলাে দেব – দেবীর অলীক শক্তির নানা কল্পকাহিনীতে পরিপূর্ণ । কিন্তু সেগুলাে আর্কিমিডিসের কাছে । খাপছাড়াও অবিশ্বাস্য বলে মনে হতাে । ভাবতেন প্রমাণ ছাড়া আবার কিসের বিজ্ঞান ?
প্রাথমিক শিক্ষা শেষ হবার পর বাবা তাকে পাঠালেন তখনকার জ্ঞান – বিজ্ঞানের চর্চার প্রাণকেন্দ্র আলেকজান্দ্রিয়ায় । সেখানে তিন বছর পড়াশুনা ও জ্ঞানার্জনের পর আর্কিমিডিস নিজ শহরে ফিরে এলেন । মনােনিবেশ করলেন বিজ্ঞান চর্চায়।তার দেশের তৎকালীন রাজা হিরাে বিজ্ঞান চর্চায় তার কৃতিত্বের জন্য তাকে অত্যন্ত রেহ করতেন । একটা ঘটনা তাে কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছে তার । আপেক্ষিক গুরুত্ব নির্ণয়ের তত্ত্ব আবিষ্কারকে কেন্দ্র করে ।
একবার রাজা হিরাে এক স্বর্ণকারকে দিয়ে একটা সােনার মুকুট বানালেন । তার মনে হঠাৎ প্রশ্ন জাগলাে মুকুটি খাটি সােনা দিয়েতৈরি করা হয়েছে কিনা ? তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য তিনি তলব করলেন আর্কিমিডিসকে । কিছুটা খামখেয়ালি হলেও সব ব্যাপারে আন্তরিক ছিলেন আর্কিমিডিস । তিনি রাজার নির্দেশ পেয়ে সব ভুলে এর সমাধান খোঁজার ব্যাপারে একান্ত একাগ্রচিত্তে মনােনিবেশ করলেন ।
আর্কিমিডিস এর আবিষ্কার – Archimedes invention :
একদিন বাথরুমে জল ভর্তি এক চৌবাচ্চায় নামতেই তিনি দেখলেন চৌবাচ্চা থেকে বেশ কিছুটা জল উপচে বাইরে পড়ে গেল । আর সেইসঙ্গে তার শরীরও কিছুটা হাল্কা হয়ে গেল । তখনই তার মাথায় বিদ্যুত গতিতে চিন্তার ফলে বস্তুর আপেক্ষিক গুরুত্ব মাপার বিষয়টি খেলে গেল । উলঙ্গ অবস্থাতেই চৌবাচ্চা থেকে উঠে তিনি রাস্তা দিয়ে দৌড়ে রাজার দরবারে গেলেন । মুখে বলছেন ইউরেকা , ইউরেকা ! অর্থাৎ পেয়ে গেছি , পেয়ে গেছি ! তার মানে । রাজার দেওয়া প্রশ্নের সমাধান তিনি পেয়ে গেছেন স্বর্ণপিন্ডের আপেক্ষিকগুরুত্ব মাপার সূত্রটা আবিষ্কার করেই । রাজা আর্কিমিডিসের সূত্র অনুসরণ করেই জানতে পারলেন তার সন্দেহ অমূলক নয় । আর্কিমিডিসের বিখ্যাত সূত্রটি হলাে— “ কোন বস্তু জলেতে ডােবালে তার ওজন কিছুটা কমে যায় । আর এই ওজন হ্রাসের পরিমাণ বস্তু কর্তৃকঅপসারিত জলের ওজনের সমান । ” এই সূত্র ‘ আর্কিমিডিসের সূত্র ’ নামেই সুপরিচিত । আণবিক সাবমেরিন – সহ যাবতীয় জুবােজাহাজ আর্কিমিডিসের তত্বের উপর নির্ভরশীল । এই সূত্র ধরে তিনি একের পর এক বলবিদ্যা জগতে আবিষ্কার করে চলেছিলেন নানা বিষয় । এভাবে আর্কিমিডিসআধুনিকবিজ্ঞানের প্রাথমিকভিত্তি তৈরি করে যান ।
আর্কিমিডিস এর মৃত্যু – Archimedes Death :
২১২ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে আর্কিমিডিসের বয়স যখন ৭৫ বছর , তখন ভর দেশ রােমানদের দখলে চলে যায় এবং রােমান বীর মার্সেনাস বিষয়ে এর সৈন্যরা তাকে হত্যা করে । সে সময় তিনি বৈজ্ঞানিক নানা গবেষণায় নিয়ােজিত ছিলেন ।
good post
ReplyDelete